আপনার দৈন্দন্দিন কাজের কম্পিউটার টি যদি নোংরা দেখায় কিংবা কাজের সময় যদি স্লো হয়ে যায় তবে মাথা চুল ছেড়া ছাড়া উপায় থাকে না। তাই আজকে আমি জানাবো কিভাবে কাজের ফাকে ফাকে আপনি আপনার কম্পিউটার পরিষ্কার রাখবেন?
১) সবচেয়ে ভালো উপায় হলো কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারগুলো আলাদা আলাদা করে খুলে মেশিন দিয়ে/ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করা। তবে নিজে যদি কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো ধারণা না রাখেন তবে আপনার নিজে হাতে না করাই ভালো।
২) বাইরের দিক/কেবিনেট বা বডি পরিষ্কার করার জন্য বিভিন্ন গ্লাস ক্লিনার পাওয়া যায় যেমন স্কচব্রাইট ব্যবহার করতে পারেন অথবা ভিতরের সকল পার্টস আলাদা করে ভীম লিকুইড ব্যবহার করতে পারেন। পরিমাণে হালকা থাকলে বাইরের ধূলোময়লা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে পারেন। সরাসরি কোনকিছু স্প্রে করবেন না বা সরাসরি কোন লিকুইড ঢালবেন না।
৩) ভিতরের অংশের মধ্যে দুই জায়গায় সব থেকে বেশি ময়লা জমে। প্রসেসরের কুলিং ফ্যান এবং পাওয়ার সাপ্লাই এর ফ্যান ছাড়াও বিভিন্ন RGB ফ্যান ব্যবহার করা হয়। মূলত এই ফ্যান গুলোতেই সব থেকে বেশি ময়লা জমে। এই ময়লা পরিষ্কার করতে আগে পাখা গুলো যেন না ঘোরে সে ব্যবস্থা করুন। তারপর টুথব্রাশ দিয়ে খুবই ধীরে ধীরে বা নরম কাপড় দিয়ে হালকা ভাবে পরিষ্কার করুন। রাউন্ড ব্রাশও ব্যবহার কতে পারেন। সরাসরি ফ্যানে ভ্যাকুয়াম বা কম্প্রেসড এয়ার স্প্রে না করােই ভালো।
৪) মাদারবোর্ড পরিষ্কার করার সময় ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের বিকল্প হিসেবে কম্প্রেসড এয়ার ব্যবহার করতে পারেন। অথবা ব্যাটারিযুক্ত পোর্টেবল ভ্যাকুয়াম ব্যবহার করতে পারেন। এসি প্লাগের ভ্যাকুয়াম ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ এতে প্রচুর স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি তৈরি হয় যা আপনার মাদারবোর্ড এর পরিবাহী পার্টস গুলোর ক্ষতি করতে পারে। যেসব জায়গা খুব সুক্ষ এবং ছোট সেসব জায়গায় কটন বাড ব্যবহার করে ধীরে ধীরে ময়লা গুলো বের করে আনুন।
খেয়াল রাখুন, ভেতরের ময়লাগুলো বের হয়ে যেন মাদারবোর্ডের উপর বা কম্পিউটার কেইসের ভেতর না পড়ে।
৫) মাদার বোর্ড এর পাশাপাশি আপনাকে এর প্রসেসর টিও ভালো ভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। এজন্য প্রথমে প্রসেসরের উপর থেকে কুলিং ফ্যান টি ধীরে ধীরে খুলে ফেলুন। এরপর প্রসেসর টি ভালো ভাবে নরম সুতি কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে থার্মাল পেষ্ট প্রসেসরের নিচে লাগিয়ে আবারো সেট করে ফেলুন। খেয়াল রাখবেন কোনো পিন যেন বাকা না হয়ে যায়।
৫) মনিটর পরিষ্কার করতে একখন্ড শুকনো পরিষ্কার কটন/মাইক্রোফাইবার কাপড়ের টুকরোয় কিছুটা আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল নিয়ে সেটা দিয়ে পরিষ্কার করুন। মনিটর ঝকঝকে হবে। মনিটরে পানি/ডিটারজেন্ট লাগাবেন না। কম্পিউটার পরিষ্কার করার জন্য বাজারে আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল পাওয়া যায়।
৬) প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও কি-বোর্ড, মাউস হালকা নরম কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন। কটন বার দিয়ে ভিতরের ময়লা গুলো ধীরে ধীরে খুচিয়ে বের করে আনতে হবে। এর পরেও যদি মনে হয় ময়লা আছে তাহলে বাটন গুলো খুলে হালকা ভাবে সুতি কাপর দিয়ে পরিষ্কার করুন।
সর্তকতাঃ
১) চালু কম্পিউটারে কখনো কখনো পরিষ্বার করতে যাবেন না।
২) পরিষ্কারের পূর্বে পাওয়ার প্লাগ টি আনপ্লাগ করেছেন কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হন।
৩) কম্পিউটারের উপর কখনো পানির গ্লাস বা কোনো তরলের বোতল রাখবেন না।
৪) কম্পিউটার টেবিলে কোনো কিছু না খাওয়াই ভালো। তবে খেলেও সতর্কতার সাথে খাবেন।
৫) কম্পিউটারের ভেতরে যথাযথ বাতাস চলাচল রাখতে হবে এজন্য ভ্যান্টিলেশন স্লটগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে।
৬) ভ্যান্টিলেশন স্লটগুলোর সামনে কোনো কিছু রাখবেন না। যাতে বাতাস চলাচল ব্যবহত না হয়।
আশা করি এ বিষয়গুলো আপনাদের অনেক কাজে আসবে, আজ তাহলে এ পর্যন্ত সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন