বিভিন্ন ফাইল, তথ্য, গান, ভিডিও সহ প্রায় সকল ডাটা আদান-প্রদানের অন্যতম ডিভাইস প্রেনড্রাইভ। আমরা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কেনার সময় যতটা খুটিয়ে খুটিয়ে সবকিছু দেখি পেনড্রাইভ কেনার সময় তা করি না। শুধু স্টোরেজ দেখি কোনটায় বেশি আর কোনটায় টাকা কম।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারীরা বাজারে গিয়ে এর ধারণক্ষমতা, রঙ, আকার, বাহ্যিক সৌন্দর্য ইত্যাদি দেখে কিনে ফেলেন। এভাবে কিনে কি আমরা তাৎক্ষনিক হয়তো কিছু সুবিধা পাচ্ছি কিন্তু বাস্তবেই কি আমরা জিতে যাচ্ছি? পেনড্রাইভ কেনার সময় এটা মোটেও ঠিক নয়।
পেনড্রাইভ কেনার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি তা নিয়ে আজ আলোচনা করা হলো।
👉 আপনি পেনড্রাইভ কেনার সময় যদি অল্প টাকায় বেশি স্টোরেজ খোজার চেষ্টা করেন তবে আপনি নিশ্চিত ভাবেই ঠকবেন। কেননা আপনার জেতাটা সাময়িক। সস্তা ও দামি পেনড্রাইভের স্পেসিফিকেশনের মান দেখতে একই রকম হলেও এগুলোর কম্পোনেন্ট আলাদা। তাই কিছুদিন পর পর নতুন আর একটা করে কেনার থেকে এখনই দাম দিয়ে ভালো একটাই কিনুন।
👉 আপনি যদি ভাবেন দেখতে অনেক সুন্দর, অনেক পাতলা এবং ছোট আকারের এককথায় স্মার্ট পেনড্রাইভগুলোই হয়তো ভালো হবে তবে তা ভুল। এ জাতীয় পেনড্রাইভ কিছুদিন পর পিসির ইউএসবি পোর্টের সাথে যুক্ত করলে কিছুটা ঢিলে হয়ে যায়। তার উপর আকারে ছোট বানাতে গিয়ে এর কম্পোনেন্টগুলো খুবই হালকা হওয়ায় খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। ছোট হওয়ায় এটা হারিয়ে যাওয়াও সহজ। তাই শুধু চেহারা দেখে প্রেমে পড়বেন না। মনে রাখবেন “চকচক করলেই সোনা হয় না”।
👉 পেনড্রাইভ কেনার আগে আপনার পিসি বা ল্যাপটপের ইউএসবি পোর্ট জেনে নিন। ধরুন, আপনার কম্পিউটারের পোর্ট ইউএসবি ২.০ এর কিন্তু পেনড্রাইভ কিনলেন ইউএসবি ৩.০ এর তাহলে আপনার কাঙি্খত ট্র্যান্সফার রেটটি পাবেন না। ইউএসবি ৩.০ প্রযুক্তিটি প্রায় আপ-টু ১০০ মেগাবাইট পার সেকেন্ড রেটে ডাটা ট্রান্সফার করতে সক্ষম হলেও ইউএসবি ২.০ এর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ মাত্র ১৫ মেগাবাইটের মত। তাই কিনতে হলে ইউএসবি ৩.০ এর পেনড্রাইভ কিনুন।
👉 একটি পেনড্রাইভ কতদিন ব্যবহার করবেন? যদি ভেবে থাকেন একটা দিয়েই জীবন পার তবে আপনার এ ধারণা পোষণ করার আগে জেনে রাখা উচিত একটি পেনড্রাইভের গড়ে প্রায় ৩ থেকে ৫ হাজার পর্যন্ত রাইট সাইকেল থাকে। অর্থাৎ গড় আয়ু এমনিতেই সীমিত। তবে এমন অনেক পেনড্রাইভও আছে যেগুলো ৩ হাজারেরও কমসংখ্যক বার রাইট করার পরেই নষ্ট হয়ে যায় আবার কিছু কিছু পেনড্রাইভ লাখ রাইট স্কেলও ছাড়িয়ে যায়। যদি খাতা কলম নিয়েও হিসাব করতে বসেন তাহলে হিসেবটা এমন দাড়ায় আপনি যদি দিনে দুইবার করেও পেনড্রাইভ এ রাইট করেন তবে গড় রাইট সাইকেল শেষ করতে ৪/৫ বছর লেগে যাবে। তাই একটু টাকা খরচ করুন লাইফ স্প্যান বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এটাও মনে রাখবেন লাইফ স্প্যান কোন ব্র্যান্ডের উপর নির্ভর করে না।
👉 এমন অনেক পেনড্রাইভ রয়েছে যেগুলো বেশ শক্ত, হালকা চাপে বা পানিতে পড়ে গেলেও সমস্যা হয় না। কিনলে এগুলোই কিনুন।
👉 আপনার পেনড্রাইভটি যদি সিকিওর কোনো কাজে ব্যবহৃত হয়, যদি আপনার তথ্য সেনসেটিভ হয় তবে তথ্যচুরি রোধে প্রোটেকশন অফার করে এমন পেনড্রাইভ কিনুন। আপনার তথ্যের নিরাপত্তার জন্য ডাটা আদান প্রদানের আগেই এনক্রিপ্ট করে নেওয়া উচিত।